বঙ্গবন্ধু টানেলঃ আজকের এই নিবেন্ধ আমরা বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো। সরকারি-বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় বা বিসিএস এ বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছর ধরেই বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষার আসছে। তাই বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে সকলের জেনে রাখা দরকার।
সূচীপত্র
বঙ্গবন্ধু টানেল । Bangabandhu Tunnel
বাংলাদেশের একটি যুগান্তকারী মেগাপ্রজেক্ট হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল। এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ টানেলের যুগে প্রবেশ করবে তাছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় নদী তলদেশের প্রথম ও দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গপথ। বঙ্গবন্ধু টানেল বা কর্ণফুলী টানেল হলো কর্ণফুলী নদীর নিচে সুড়ঙ্গ সড়ক। এই সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক যুক্ত হবে। চীনা প্রতিষ্ঠান China Communication and Construction Company Limited এই সুড়ঙ্গ নির্মাণ প্রকল্পের নির্মান কাজ করছে। বঙ্গবন্ধু টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৪৩ কিলোমিটার। কর্ণফুলী নদীর মধ্যভাগে কর্ণফুলী সুড়ঙ্গ সড়কটি অবস্থান করবে ১৫০ ফুট গভীরে।
১৪ অক্টোবর ২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। টানেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। আগামী ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
বঙ্গবন্ধু টানেল কি?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেল বা কর্ণফুলী টানেল হলো কর্ণফুলী নদীর নিচে সুড়ঙ্গ সড়ক।
বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর কবে স্থাপন করা হয়েছিলো?
উত্তরঃ ১৪ অক্টোবর ২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে কবে শুরু হয়েছে?
উত্তরঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণ কাজ উদ্ভোদন কে করেন?
উত্তরঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মান ব্যায় কত?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রাথমিক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা।
বঙ্গবন্ধু টানেল কবে চালু হবে?
উত্তরঃ আগামী ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের শুভ উদ্বোধনের তারিখ ঠিক করা হয়েছে।
আরো দেখুনঃ
- নোটারি পাবলিক কী । নোটারি পাবলিক খরচ কত । Notary Public
- বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু | BD President Info
- এক নজরে বাংলাদেশ | Bangladesh At a Glance 2023
- ৬৪ জেলার নাম, প্রতিষ্ঠার সাল ও ওয়েবসাইট । 64 Zila of Bangladesh
- ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের আদ্যপান্ত । History of the FIFA World Cup
বঙ্গবন্ধু টানেল কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারায় বঙ্গবন্ধু টানেল অবস্থিত।
বঙ্গবন্ধু টানেলের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তরঃ ৩.৩২ কিলোমিটার (২.০৬ মাইল)।
বঙ্গবন্ধু টানেলের সর্বমোট দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
উত্তরঃ কর্ণফুলী টানেলের মোট দৈর্ঘ্য ৯.৩৯২ কিলোমিটার।
বঙ্গবন্ধু টানেলের ব্যাস কত কিলোমিটার?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেলের টানেলের ব্যাস ১০.৮০ মিটার।
বঙ্গবন্ধু টানেলের আসল নাম কি?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেলের আসল নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।
বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্প পরিচালকের নাম কি?
উত্তরঃ জনাব হারুনুর রশিদ চৌধুরী।
বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ করবে কোন দেশ?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ করবে বাংলাদেশ। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন এ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) সহায়তা করবে।
বঙ্গবন্ধু টানেলের জন্য কে কত টাকা বিনিয়োগ করেছে?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রাথমিক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করছে বাংলাদেশ সরকার ও চায়না এক্সিম ব্যাংক থেকে সহায়তা নেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা।
বঙ্গবন্ধু টানেল সংযুক্ত হচ্ছে কোথায়?
উত্তরঃ পতেঙ্গা ৪১ নং ওয়ার্ডের নেভাল একাডেমির বন্দর অঞ্চল থেকে চট্টগ্রামের আনােয়ারা পর্যন্ত।
বঙ্গবন্ধু টানেলে কয় লেনের রাস্তা রয়েছে?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেলে ২ লেনের রাস্তা রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু টানেলের যানবাহন চলাচল ক্ষমতা কত?
উত্তরঃ প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৮,০০০ টি।
বঙ্গবন্ধু টানেলের যানবাহনের গতিসীমা কত?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেলের যানবাহনের গতিসীমা ৬০ কিঃমিঃ/ ঘন্টা।
বঙ্গবন্ধু টানেলের গভীরতা কত মিটার?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেলের সর্বোচ্চ গভীরতা ১৫০ মিটার।
বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ কোনটি?
উত্তরঃ চীন।
বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য ঢাকা এবং কক্সবাজারের মধ্যে ভ্রমণের সময় ও দূরুত্ব কমে যাবে, যা স্থানীয় পর্যটন খাতে অনন্য পরিবর্তন আনবে। টানেলটি নির্মিত হলে দেশের জিডিপি ০.১৬৬ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রিয় পাঠক, আশা করছি বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কে সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু টানেল সম্পর্কিত কোন তথ্য যোগ করার প্রয়োজন মনে করলে কমেন্টে জানান। আমাদের সাধারণ জ্ঞান সেকশনে এমন আরো সমসাময়িক প্রশ্নের উত্তর বা তথ্য পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ